শ্রীলংকার রাজধানী কলম্বোতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের উদ্যোগে অমর শহিদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে। শুক্রবার সকালে ঐতিহাসিক ইনডিপেন্ডেন্স স্কয়ারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রী ড. হরিনি অমরসুরিয়া উপস্থিত ছিলেন।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) শ্রীলঙ্কার শিক্ষা মন্ত্রণালয়, জাতিসংঘের স্থানীয় দপ্তর ও শ্রীলঙ্কা স্কাউটস অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতায় বাংলাদেশ দূতাবাস বর্ণাঢ্য এ আয়োজন করে। দূতাবাস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শ্রীলংকার পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী অরুণ হেমচন্দ্র, প্রধানমন্ত্রীর সচিব, পররাষ্ট্র সচিব, শিক্ষা সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, সংসদ সদস্যবৃন্দ, বিদেশি রাষ্ট্রদূতবৃন্দ ও জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা এতে উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, শিক্ষক, স্কুলের শত শত ছাত্রছাত্রী এবং স্কাউটসহ সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে শ্রীলঙ্কার স্বাধীনতা চত্বরে বিভিন্ন ভাষাভাষীদের এক মিলনমেলায় পরিণত হয়। এ বছরের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপনের প্রতিপাদ্য ছিল “ল্যাঙ্গুয়েজ ফর পিস অ্যান্ড হারমনি”।
শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী ও অতিথিরা বিশ্বের সব মাতৃভাষার প্রতি সংহতির প্রতীক হিসেবে রং আর তুলির আঁচড়ে স্ব স্ব মাতৃভাষায় “ভাষা” শব্দটি চত্বরে রক্ষিত ক্যানভাসে ফুটিয়ে তোলেন। শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা এবং বাংলাদেশ হাইকমিশন ও শ্রীলঙ্কার মুসলিম কোরাল এনসেম্বল সদস্যদের সমবেতভাবে গাওয়া অমর একুশের “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি” গানটির মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়।
শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বাংলাদেশ হাইকমিশনের উদ্যোগের প্রশংসা করেন এবং মাতৃভাষা ও ভাষাগত বৈচিত্র্য রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বাংলাদেশের হাই কমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস তার স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেওয়ার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষা বিলুপ্তির পরিসংখ্যান তুলে ধরে সব ভাষা এবং সংস্কৃতি রক্ষায় সমবেতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
দিবসটি উদযাপনের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ দূতাবাস শ্রীলঙ্কাজুড়ে কয়েক মাসব্যাপী স্কুল ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে ভিডিও তৈরি, চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। আজকের অনুষ্ঠানে প্রতিযোগিতায় চূড়ান্তভাবে বিজয়ী ১৫ ছাত্র-ছাত্রীকে সার্টিফিকেট ও পুরস্কার দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ ছিল ভিন্ন ভাষাভাষীদের একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। কলম্বোস্থ বিভিন্ন দেশের দূতাবাস, আন্তর্জাতিক সংস্থা, বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ভাষায় সঙ্গীত, নৃত্য ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে নিজ নিজ দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরেন।
এছাড়াও, শ্রীলঙ্কার রুহুনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইউনিভার্সিটি অফ ভিজ্যুয়াল অ্যান্ড পারফর্মিং আর্টস আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপনের জন্য দুটি অ্যাকাডেমিক সম্মেলনের আয়োজন করে। বাংলাদেশের হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস বিশেষ অতিথি হিসেবে সেখানে অংশগ্রহণ করেন।