গত বছরের ২০ জুলাই ঢাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত নুর আলমের স্ত্রী খাদিজা বেগম অবশেষে চাকরি পেলেন কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম তাকে অস্থায়ী ভিত্তিতে ছাত্রীদের হোস্টেলে কাজের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
নুর আলম নিহত হওয়ার দুই মাস পর খাদিজা একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। স্বামী হারানোর পর তিনি শ্বশুরবাড়িতেও আশ্রয় পাননি, ফলে নিজের অসহায় কৃষক বাবার বাড়ি কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের কাচিচর মুন্সিপাড়া এলাকায় আশ্রয় নেন। সন্তানসহ চরম দুঃসময় কাটতে থাকে তার।
নুর আলমের মৃত্যুর পর কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন ও সদর উপজেলা প্রশাসন খাদিজার পাশে দাঁড়ায়। জেলা প্রশাসকের তহবিল থেকে কিছু সহায়তা দিলেও তার স্থায়ী কোনও সমাধান হয়নি। পরে বিষয়টি জানতে পেরে কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম তাকে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেওয়ার উদ্যোগ নেন।
খাদিজা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। তাই তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের হোস্টেলে একটি চাকরির ব্যবস্থা করা হয়। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উপাচার্যের কক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে চাকরির নিয়োগপত্র প্রদান করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম বেবু, সাংবাদিক ও বিএনপি নেতা আশরাফুল হক রুবেল, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক দেওয়ান এনামুল হকসহ অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ।
উপাচার্য ড. মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ নুর আলমের পরিবারের অসহায়ত্বের বিষয়টি জানার পর আমরা যতটা সম্ভব সহায়তা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। খাদিজাকে চাকরির মাধ্যমে স্বাবলম্বী করার চেষ্টা করা হয়েছে।
চাকরি পেয়ে খাদিজা বেগম কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, আমার স্বামী আমাদের জন্য কিছু রেখে যেতে পারেননি। সন্তান নিয়ে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। এখন অন্তত একটি কাজ পেয়েছি, যা আমাদের জীবন চালাতে সহায়ক হবে।