1. admin@talash24.com : admin :
শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ০১:২৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
চাটখিলে সয়াবিন তৈলের সংকট ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান। জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতাকর্মীরা বিগত সরকার মাদ্রাসা শিক্ষাকে ধ্বংস করার অপচেষ্টা করেছে -মাদ্রাসা বোর্ড চেয়ারম্যান গাজীপুর কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির কর্মশালা ও প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত নওগাঁ চৌমাশিয়া কেন্দ্রীয় বাজার এলাকায় থেকে ককটেল উদ্ধার ইউসিটিসিতে একাডেমিক কাউন্সিলের ১২তম সভা অনুষ্ঠিত চাটখিলে সোমপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে বিতর্ক প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত চাটখিলে পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দীনের সংক্ষিপ্ত সফর সোমপাড়া কলেজে বির্তক প্রতিযোগিতা কাঞ্চনা পালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক লাকি মল্লিকের বিদায় সংবর্ধনা

সমস্যায় জর্জরিত দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দালালদের দৌরাত্ম্য

তালাশ ২৪ ডেস্ক:
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ১৬ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা ধর্মদহ গ্রামের আমজাদ হোসেনের স্ত্রী আছিয়া খাতুন পেটের পিড়া জনিত সমস্যা নিয়ে গত মঙ্গলবার আসেন দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সেখানে টিকিট কেটে চিকিৎসককে দেখালে চিকিৎসক তাকে কয়েকটি পরিক্ষা করিয়ে আনতে বলেন। চিকিৎসকের রুম থেকে বের হতেই হাসি মুখে খালা বলে ডেকে চিকিৎসকের দেয়া ব্যাবস্থাপত্র টি নিয়ে নেন এক ব্যাক্তি।

বলেন, হাসপাতালে এসব পরিক্ষা করার কোন ব্যাবস্থা নেই, তিনি(আছিয়া) চাইলে অল্প টাকায় বাইরে থেকে ভালো করে পরিক্ষা করিয়ে দিতে পারবেন তিনি। এসময় আছিয়া খাতুন জানায় তার কাছে বেশি টাকা নেই তাই তিনি পরিক্ষা করাবেন না।

কিন্তু তার কথায় কোন পাত্তা না দিয়ে অনেকটা জোর করেই তাকে স্থানীয় আল সেবা নামের এক ডায়াগনেষ্টিক সেন্টারে নিয়ে যায়। সেখানে সব পরিক্ষা বাবদ ২৪শ টাকা বিলের কথা বলা হয়। অত টাকা নেই বললে শুধু রক্ত পরিক্ষার কথা বলে নিয়ে নেওয়া হয় আছিয়ার কাছে থাকা সাড়ে ৬শ টাকা। বাকি পরিক্ষা পরে করার পরামর্শ দেয় ডায়াগনেষ্টিক সেন্টারের লোক জন। রিপোর্ট নিয়ে ফিরে এসে আর সেই চিকিৎসককে রুমে পাননি আছিয়া।

হাসপাতালের সামনে কথা হয় আছিয়ার সাথে, তিনি বলেন, আমরা গরিব মানুষ, বিনা পয়সায় চিকিৎসার জন্য সরকারী হাসপাতালে আসলাম, কিন্তু এখানে এসে চিকিৎসাও হলো না, আমার টাকাও চলে গেলো।

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে প্রতিনিয়ত আছিয়ার মতো এমন ভোগান্তিতে পড়ছেন অগনিত সেবা প্রত্যাশীরা।

সীমান্তবর্তী এ উপজেলায় বসবাস ৮ লক্ষ্য মানুষের । বৃহত্তর এ জনগোষ্ঠির চিকিৎসা সেবার একমাত্র ভরসা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। তবে দীর্ঘদিন ধরে দালালের দৌরাত্ব ও চিকিৎসক সংকট সহ নানা সমস্যায় জর্জরিত এ হাসপাতালটি। এতে কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এ অন্চলের সাধারন মানুষ।

দালালের দৌরাত্ব ও চিকিৎসক সংকট সহ নানা সমস্যায় জর্জরিত উপজেলার একমাত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি এখন নিজেই রোগী। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে ২৫ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও রয়েছে মাত্র ৬ জন। নেই পর্যাপ্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার  ব্যবস্থাও। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে রোগী ও স্বজনরা। কাঙ্খিত স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এ অন্চলের সাধারন মানুষ।

৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হলেও এখানে গাইনী, অর্থপেডিকস, সার্জারীসহ ইএনটি বিভাগের নেই কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।২৫ জন চিকিৎসকের জায়গায় কাজ করছেন মাত্র ৬ জন। সেবা প্রত্যাশীদের অভিযোগ জেলা শহর থেকে অনেক দুরে হওয়া এবং সুযোগ সুবিধা কম থাকায় এখানে কোন চিকিৎসক থাকতে চান না। যারা এখানে বদলি হন তারাও ঠিক মতো আসতে চান না। আবার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদায়ন করলেও তারা নিজের থেকেই লবিং করে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই চলে যান।

প্রায় একযুগ ধরে বন্ধ রয়েছে এক্সরে বিভাগ। কিছু যন্ত্রাংশ নষ্ট থাকলেও দিনের পর পর তা অদৃশ্য কারনে মেরামতের কোন ব্যাবস্থা নেওয়া হয় না। সংকট রয়েছে বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জামেরও। ফলে প্রতিনিয়তই  চরম ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছে রোগী ও স্বজনেরা। অভিযোগ আছে স্থানীয় ক্লিনিক এবং ডায়াগনষ্টিক সেন্টারকে সুবিধা দেওয়ার জন্য হসাপতালের অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা মিলে কৃত্তিম ভাবে এই অবস্থার সৃষ্টি করে রেখেছে।

কয়েকজন রোগীর স্বজন বলেন, সরকারী হাসপাতাল হলেও এখানে সেবা নিতে অনেক ক্ষেত্রেই টাকা দিতে হয়। তারপর  ও হাসপাতালের পরিবেশ ভালো না। চারিপাশে অপরিস্কার। আয়াদের কাছে কোন কাজের কথা বললেই তারা টাকা চায়। টাকা না দিলে খারাপ ব্যাবহার করে।

হাসপাতালে ভর্তী মনোয়ার নামের এক রোগী বলেন, আমরা শুধু এখানে ভর্তী আছি। বাদবাকি ঔষুধ থেকে শুরু করে পরিক্ষা নিরিক্ষা করাতে হয় বাইরে থেকে। হাসপাতাল থেকে একটা স্যালাইন পর্যন্ত দেওয়া হয় না। সবই কেনা। এখানে ভর্তীর পর শুধু প্রতিদিন একবার করে ডাক্তার এসে দেখে যান।

আক্কাস আলী নামের এক রোগীর স্বজন বলেন. এখানে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের বেশির ভাগ পরিক্ষা নিরিক্ষাই করতে হয় বাইরে থেকে। দালালদের দৌরাত্বে গুনতে হয় বাড়তি টাকাও । এদের শক্ত সিন্ডিকেট আছে। আবার চিকিৎসকদের সাথেও ক্লিনিক এবং ডায়াগনেস্টিক সেন্টারের চুক্তি আছে। তাই কেউ প্রতিবাদ করে না। আবার প্রতিবাদ করে লাভ ও হয় না।

লোকবল সংকট সহ কিছু প্রতিকুলতার কথা স্বীকার করলেও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা  ডাঃ মোঃ তৌহিদুল হাসান তুহিন বলেন, নানা প্রতিকুলতার মধ্যেও সর্বাত্বক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন  তারা । যেহেতু প্রায় পাচ ভাগের একভাগ লোকবল নিয়ে তারা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন, সেহেতু কিছু সমস্যা থাকতেই পারে। তবে তাদের আন্তরিকতার কোন কমতি নেই।

আর জনবল সংকটসহ  সকল সমস্যা দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ আকুল উদ্দিন বলেন, আমি এখানে সংকট আছে তা বলবো না, তবে স্বল্পতা আছে। চিকিৎসক এবং ৩য় শ্রেনীর কর্মী স্বল্পতা আছে। যেটার নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন আছে। নিয়োগটা হয়ে গেলে সেই স্বল্পতা শেষ হয়ে যাবে। তবে এই হাসপাতালে কোন গাইনীর চিকিৎসা নেই এটা একটা বড় সমস্যা। তবে সেটার জন্যও আমি চেষ্টা করছি আসা করি সেটাও দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে।

তবে ৮ লক্ষ্য মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির সকল সমস্যা নিরসনে দ্রুতই কারযকরি পদক্ষেপ নেবে কর্তৃপক্ষ, এমটাই প্রত্যাশা এ অন্চলের জনসাধারনের।

Facebook Comments Box
এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© স্বত্ব সংরক্ষিত © তালাশ ২৪
প্রযুক্তি সহায়তায় Shakil IT Park